তিনি ইউএনবিকে বলেন, ‘গণপূর্ত অধিদপ্তর ও রাজউকে টেন্ডার প্রক্রিয়ায় অনিয়ম পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রতিটি টেন্ডার যাতে শতভাগ স্বচ্ছ হয় তা নিশ্চিত করা হবে। কোনো ধরনের সিন্ডিকেট থাকবে না।’
মন্ত্রণালয় ও গণপূর্ত অধিদপ্তরের কিছু কর্মকর্তার যোগসাজশে এবং সিন্ডিকেটের মাধ্যমে প্রভাব খাটিয়ে টেন্ডার বাগিয়ে নেয়া ‘যুবলীগ নেতা’ জিকে শামীম সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি দায়িত্ব নেয়ার আগে টেন্ডার নিয়ে গণপূর্ত অধিদপ্তর ও রাজউকে সিন্ডিকেট হয়েছে বলে শুনেছি...আগে কে বা কারা টেন্ডার নিয়ে সিন্ডিকেট করতেন এবং কীভাবে তা হতো, সব বিষয়েই তথ্য নেয়া হচ্ছে।’
রেজাউল করিম জানান, ইতিমধ্যে উন্নয়নমূলক যেসব কাজ হয়েছে তার টাকার হিসাব চেয়ে গণপূর্ত অধিদপ্তর ও রাজউকসহ তার মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা সব সংস্থাকে চিঠি দেয়া হবে এবং সংস্থাগুলোর কাজের তথ্যে গরমিল পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মন্ত্রী জানান, তিনি দায়িত্ব নেয়ার পর স্বচ্ছতার জন্য অনেক টেন্ডার বাতিল করে পুনরায় টেন্ডার দিয়েছেন।
গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সূত্র অনুযায়ী, আওয়ামী লীগ সরকারের গত মেয়াদে গণপূর্ত অধিদপ্তরে আধিপত্য বিস্তার করে পছন্দের ব্যক্তিদের টেন্ডার পাইয়ে দিতেন জিয়াউদ্দিন নামে এক ব্যক্তি। আর রাজউকে বাবলু নামে একজনের প্রভাব ছিল। তারা দুজনই তৎকালীন মন্ত্রীর কাছের লোক ছিলেন বলে সবাই জানতেন।
শুক্রবার রাজধানীর নিকেতনের কার্যালয় থেকে বিপুল পরিমাণ এফডিআর ও নগদ অর্থসহ গ্রেপ্তার হওয়া যুবলীগ নেতা জিকে শামীম গণপূর্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের যোগসাজশে তার প্রতিষ্ঠান জিকেবি অ্যান্ড কোম্পানির জন্য বেশিরভাগ কাজ বাগিয়ে নিতেন বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্র জানিয়েছে।
এছাড়াও শামীম রাজউক, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ও রেল ভবনের টেন্ডারে কাজ করতেন। বর্তমানে তার প্রতিষ্ঠানের অধীনে সচিবালয়ে দুটি ভবন, পিএসসি ভবন, আগারগাঁওয়ে এনজিও ফাউন্ডেশন ও রাজস্ব ভবন, আশকোনায় র্যাব সদরদপ্তর, রাজধানীর বেইলি রোডে পার্বত্য চট্টগ্রাম কমপ্লেক্স এবং কয়েকটি হাসপাতালের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে, যাতে অন্তত হাজার কোটি টাকা যুক্ত আছে।
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার স্কুল শিক্ষকের ছেলে শামীম রাজনৈতিক প্রভাব কাজে লাগিয়ে চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজির ‘রাজা’ হয়ে উঠেন। তার বাবা প্রয়াত আফসার উদ্দিন হরিহরদি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। শামীম সাতজন সশস্ত্র দেহরক্ষীসহ গাড়িবহর নিয়ে চলাচল করতেন। যাতায়াতের সময় রাস্তা ফাঁকা করার জন্য তার দেহরক্ষীরা লাউডস্পিকারে নির্দেশ দিতেন।